মধ্যেযুগের ত্রাশ শায়খুল জাবাল






"গুপ্তঘাতক বা অ্যাসাসিন( হাশাশিন বা ফেদায়ী)"


নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কালো কাপড়ে চোখ মুখ ঢেকে রেখে শরীরের নিচে একগাদা অস্ত্র লুকিয়ে মিশরের পথে পথে নিজের পরিচয় আত্মগোপন করে ঘুরে বেড়ানো একদল যোদ্ধার অবয়ব।

প্রিন্স অফ পারসিয়া চলচ্চিত্র বা অ্যাসাসিন্স ক্রিড গেম অ্যাসাসিন মিশরের সেই ভয়ংকর সন্ত্রাসীদের ছবিগুলো মনের মধ্যে আরো স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলে। তবে অ্যাসাসিনদের সূচনা কিন্তু মিশর থেকে নয়।

মিশর থেকে আরও ৩,৬২১ কিলোমিটার দূরে মধ্যে এশিয়ার বিখ্যাত শহর সমরকন্দে ইসমাইলি ফিরকার এক রহস্যমানব হাসান-ইবনে-সাব্বাহ নামের একজনের হাত ধরে জন্ম হয় ইতিহাসে দীর্ঘ সময় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টিকারী এ গোষ্ঠীর।


মাত্র কয়েক বছরে এরা পুরো মুসলিম বিশ্বে নিজেদের প্রভাব ছড়িয়ে দেয়। আধুনিককালে প্রতিষ্ঠিত সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর প্রাণপুরুষ বলা যায় তাকেই। তার আবিষ্কৃত নানা কূটকৌশল আজও অনুসরণ করে চলেছে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো।


হাসান ইবনে সাব্বাহর জন্ম ১০৫০ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের তুস শহরে ইসনা আশারিয়া (বারো ইমামে বিশ্বাসী) এক শিয়া পরিবারে। তার শৈশব কালেই তার পরিবার ইরানের অন্যতম প্রাচীন শহর ‘রায়’ তে স্থানান্তরিত হয়। সেখানেই হাসান পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসারে তার প্রাথমিক শিক্ষাদীক্ষা সমাপ্ত করেন।তার পিতা সাব্বাহ ছিলেন একজন রাফেজি ফকিহ।

রায় শহর ছিল ইসমাইলী ধর্মমত প্রচারের অন্যতম কেন্দ্র।সাধারণত বলা হয় বাল্যকালে হাসান ইবনে সাব্বাহ নিজামুল মুলক তুসি ও উমর খৈয়ামের সহপাঠী ছিল। তবে আধুনিককালের গবেষকরা এ বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে প্রমাণ করেছেন।

রায় শহরের ইসমাইলী ধর্মীয় কেন্দ্রে হাসানের মনে আধিভৌতিক বিষয়ে গভীর আগ্রহ জেগে ওঠে তাই সে বারোটি নির্দেশনা মেনে চলে এবং জাদুবিদ্যাতেও‌ দক্ষতা অর্জন করে। এছাড়াও সে ছাত্রজীবনে অন্যান্য বিষয়ের সাথে সাথে রসায়ন, জ্যোতির্বিদ্যাতেও দক্ষতা অর্জন করে। একই সময়ে হাসান আবদুল মালিক ইবনে আত্তাশের সান্নিধ্যলাভ করে। আবদুল মালিক ইবনে আত্তাশ ছিলেন ইসমাইলীদের অন্যতম ধর্মীয় গুরু।

হাসান আমির যারাব নামক ইসমাইলী আলেমের কাছেও ইসমাইলী মতবাদের শিক্ষা
লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি আবু নাসের সরজ এবং রায় শহরের অন্যান্য ইসমাইলী মতবাদ প্রচারকারীর কাছে এ বিষয়ে আরো শিক্ষালাভ করেন। ফলস্বরূপ তিনি ইসমাইলি মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সতের বছর বয়সে তৎকালীন ইসমাইলী ইমাম ফাতিমি খলিফা আল-মুনতাসির এর আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করেন। সে-সময়ে ইসমাইলীদের মূল কেন্দ্র ছিল মিসরে।

৪৬৭ হিজরিতে হাসান রায় থেকে মিসরের উদ্দেশ্যে সফর শুরু করে ৪৭১ হিজরিতে মিসরে পৌঁছে। সে মিসরে ৮ মাস অবস্থান করে। এ সময় সে ফাতেমী খলিফা মুস্তানসিরের সাথেও সাক্ষাত করে। খলিফা মুস্তানসির হাসানকে শাহি প্রাসাদে মেহমান করে রাখেন। তাকে প্রচুর উপহার দেন। মিসরে অবস্থানকালে হাসান ফাতেমিদের প্রভাব-প্রতিপত্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল এতে কোনো সন্দেহ নেই। খলিফা মুস্তানসির পারস্য ও খোরাসানে ইসমাইলিদের দাওয়াত প্রচার করার জন্য হাসানকে প্রেরণ করেন। সে-সময় হাসান খলিফাকে জিজ্ঞেস করে আপনার পর আমরা কাকে অনুসরণ করব? খলিফা বললেন, আমার পুত্র নিজারকে। হাসান পারস্যে এসে তার দাওয়াত প্রচার করতে থাকে। সে সবাইকে নিজারের দিকে আহবান করতে থাকে। সেই থেকে হাসানের অনুসারীরা "নিজারিয়া ইসমাইলিয়া" নামে পরিচিত লাভ করে।

মিশরে থাকতেই তার শিক্ষাগ্রহণ ও ধর্মপ্রচারকালীন সময়ে তিনি উজির বদর আল জামালির বিরাগভাজনে পরিণত হন। খলিফা মিশরের শাসক হলেও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হওয়ায় কার্যত উজিরই মিশরের প্রকৃত শাসক ছিলেন। বদর আল জামালি তার পুত্র আল-আফদালকে উজির মনোনীত করেন। খলিফা আল মুনতাসির মারা যাবার পর তার বড়পুত্র নিজারের ইমাম হবার কথা থাকলেও আল-আফদাল দাবি করেন মৃত্যুর পূর্বে খলিফা তার মনোনীত উত্তরাধিকার পরিবর্তন করে কাসিম আহমদকে তার সিংহাসনের উত্তরাধিকার হিসেবে মনোনীত করে গিয়েছেন। কাসিম আহমদ সিংহাসনে বসলে নিজার সেখান থেকে আলেক্সজান্দ্রিয়ায় পালিয়ে যায় এবং সেখানে নিজেকে ইমাম হিসেবে প্রচারিত করেন। ১৯০৫ সালে উজির তাকে পরাজিত করে কায়রোতে বন্দী হিসেবে নিয়ে আসেন। সেখানে তার শিরশ্ছেদ করা হয়। হাসানকে বদর আল-জামালি কারাবন্দী করেন। কারাগারের একটি মিনার ধ্বসে পড়লে সেটিকে হাসানের শুভলক্ষণ হিসেবে দেখা হয় এবং তাকে জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয়। তবে মুক্তি দিলেও তাকে উত্তর আফ্রিকার জাহাজে করে দ্বীপান্তরিত করা হয়। তবে তিনি যে জাহাজে করে যাত্রা করছিলেন তা পথিমধ্যে বিধ্বস্ত হয়। তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে সিরিয়া নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর হাসান পুরোপুরি ধর্ম প্রচারণার দিকে মনোযোগী হন। তিনি ইরানের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। তিনি উত্তর ইরান ও কাস্পিয়ান সাগরের উপকূলের পাহাড়ি এলাকায় তার মনোযোগ নিবদ্ধ করেন। এ অঞ্চলে তিনি প্রধান ধর্মপ্রচারকারীর দায়িত্ব নেন এবং বাকি অঞ্চলগুলোতে ব্যক্তিগতভাবে তার প্রশিক্ষিত ধর্মপ্রচারকারীদের পাঠান। তার এ কর্মকান্ড নিজাম-উল-মুলকের কানে গেলে তিনি হাসানকে বন্দী করতে সৈন্যবাহিনী পাঠান। হাসান তাদেরকে কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে আরো গভীর পাহাড়ি অঞ্চলে প্রবেশ করেন।


এ সময় হাসান তার জন্য এমন এক জায়গার খোঁজ করতে থাকে যেখানে সে তার কার্যক্রম আরো ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারবে। খোঁজ করতে করতে সে ১০৮৮ সালে আলামুত দূর্গের সন্ধান পায়। এখানে হাসান তৎকালীন ফাতিমীয় খলিফার ইমাম হবার দাবি অস্বীকার করেন। তিনি নিজারের সমর্থক ছিলেন। এখানেই তিনি তার স্থায়ী কেন্দ্র গড়ে তুলে প্রকৃত ইমাম হিসেবে নিজারের উত্তরাধিকারকে সমর্থন করেন । হাসান নিজেকে দাবি করত খলিফা মুস্তানসিরের নায়েব বলে। একইসাথে সে শায়খুল জাবাল নামেও পরিচিত হয়ে ওঠে । হাসানের সাথে ছিল একটি বালক। সে তার অনুসারীদের বলত সবার জন্য শিক্ষক আবশ্যক। আর তোমাদের শিক্ষক হলো এই বালক। তার আনুগত্য করা তোমাদের উপর ওয়াজিব। সে সন্তুষ্ট হলে তোমরা দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তি পাবে। তার আনুগত্য ছাড়া আর কিছুর দরকার নেই।

আলামুতে একটি দুর্গ ছিল যা প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার লম্বা এবং পাঁচ কিলোমিটার চওড়া একটি উপত্যকা যার প্রতিরক্ষা হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল। কিংবদন্তী আছে যে, এক রাজা এখানে শিকার করার সময় এক ঈগলকে দেখে সেটিকে অনুসরণ করেন। কিছুক্ষণ পর সেটি উড়ে গিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় এক পাথরের ওপর বসলে রাজা এটিকে এক শুভলক্ষণ হিসেবে নেন। এ জায়গার কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে রাজা এখানে এক দুর্গ নির্মাণ করে সে দুর্গের নামকরণ করেন ‘আলামুত’ বা ‘ঈগলের বাসা’।


প্রায় দু’বছর সেখানে অবস্থান ও ইসমাইলি মতবাদ প্রচারের মাধ্যমে সে ১০৯০ খ্রিস্টাব্দে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গের দখল নিতে সমর্থ হয়। লোকমুখে প্রচলিত কথা অনুসারে হাসান দুর্গের মালিককে ৩০,০০০ দিনারের বিনিময়ে দুর্গ বিক্রি করে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। দুর্গের মালিক রাজি হলে হাসান যুদ্ধ শুরু করে এবং দুর্গের মালিককে পরাজিত করে দুর্গের দখল করে। সে দুর্গের মালিককে এক ধনী জমিদারের নাম ও ঠিকানা লিখে একটি চিঠি দেয় এবং তার কাছ থেকে সে তাকে তার পাওনা টাকা নিতে বলে। কিংবদন্তী আরো বলে যখন সে জমিদার হাসানের সই সহ সে চিঠি দেখেছিলেন তিনি দুর্গের মালিককে বিস্মিত করে বিনাবাক্য ব্যয়ে তার পাওনা টাকা পরিশোধ করে দেন।

আলামুত দুর্গ দখল করার বছরই হাসান অ্যাসাসিন বা গুপ্তঘাতকদের এ সংঘটি প্রতিষ্ঠা করেন। অ্যাসাসিনরা ছিলো শিয়াদের বিচ্ছিন্ন একটি অংশ। তিনি পাহাড়ি অঞ্চলের উপরের অংশের দখল পাওয়ামাত্র যুদ্ধ ও গুপ্তহত্যার মাধ্যমে তার রাজনৈতিক ক্ষমতার বিস্তৃতি ঘটানো শুরু করেন।এ সময় আলামুতের আশপাশের কয়েকটি কেল্লাও সে দখল করে নেয়।


হাসান বিন সাব্বাহর অনুসারীরা নিজেদের ফিরকার প্রচার শুরু করে জোরেশোরে। এই ফিরকার প্রচারকরা নিজেদের ফিরকার প্রচার করতো নানা কৌশলে। প্রথমেই তারা খুঁজে নিত এমন লোকদেরকে, যাদের মধ্যে ধর্মীয় জ্ঞান নেই। তারপর তার সাথে কথা বলা শুরু করতো। এ ক্ষেত্রে তারা কথা বলা শুরু করতো অন্ধকার কক্ষে। যেখানে আলো আছে সেখানে কখনো আলাপ করতো না। আলোচনার শুরুতে তারা নানা প্রশ্নের মাধ্যমে শ্রোতাকে বিভ্রান্ত করে দিত। যেমন বিভিন্ন সুরার শুরুতে থাকা হুরুফে হিজার অর্থ জিজ্ঞেস করতো। বিশুদ্ধ ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবে শ্রোতারা জবাব দিতে পারতো না। তখন বাতেনিরা কৌশলে নিজেদের মতবাদ ও বিশ্বাস আলোচনা করতো। হাসান বিন সাব্বাহ অল্পদিনেই প্রচুর অনুসারী জুটিয়ে ফেলে।


এছাড়াও প্রচলিত আছে যে হাসান সাব্বাহ হাশিশ নামক এক ধরনের মাদক দিয়ে আচ্ছন্ন করে তার‌ লোকদেরকে তার সাজানো বাগানে নিয়ে যেতেন। উল্লেখ্য যে, অ্যাসাসিন শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ‘হাশাশিন’ থেকে। হাশিশ পানকারীদের হাশাশিন বলে উল্লেখ করা হতো। সে বাগানে তাদের চারদিকে সুন্দরী নারীদের রেখে তাদেরকে বিশ্বাস করানো হতো তারা স্বর্গে আছে। হাসান যখন সে বাগানে ভ্রমণ করতে যেতেন তখন তাকে একজন পবিত্র বার্তাবাহক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হতো। পরে তাদেরকে আবারও মাদকের আচ্ছন্নতার মাধ্যমে বাইরে ফিরিয়ে এনে এক অন্ধকূপে নিক্ষিপ্ত করা হতো এবং বলা হতো তারা যদি পুনরায় সে স্বর্গে ফিরে যেতে চায় তবে তাদেরকে হাসানের প্রদানকৃত আদেশসমূহ মানতে হবে। স্বর্গে ফেরার জন্য তাদের মৃত্যুবরণ করার ইচ্ছা তাদেরকে ভয়ের জগতের বাইরে নিয়ে যেতো। এ সময়েই তাদেরকে অ্যাসাসিনেশনের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। এভাবেই উৎপত্তি হয়েছিলো গুপ্তঘাতকদের সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে ভয়ানক সংগঠনের।

গুপ্তহত্যার সর্বপ্রথম শিকার ছিলেন নিজামুল-মুলক। ১০৯২ সালের অক্টোবরের ১৪ তারিখ তাকে হত্যা করা হয়। এছাড়াও বায়হাকি শহরের শাসনকর্তা, কারামাইয়া উপদলের প্রধানসহ আরো অনেকে ১১০১-০৩ সালের মধ্যে গুপ্তহত্যার শিকার হয়।


এর পরবর্তী সময়ে হাসান স্বেচ্ছায় লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যায়। তবে তিনি তার কার্যক্রম যথাযথভাবে চালিয়ে যেতে থাকেন। দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর তিনি আলামুত থেকে আর অন্য কোথাও যাননি। এ দীর্ঘসময় তিনি তার দুর্গে পড়াশোনা, ধর্মীয় কাজকর্ম ও শাসনকার্য চালিয়েছেন। তিনি তার শাসনকার্জে ধর্মীয় রীতিনীতি মানার ক্ষেত্রে খুবই কঠোর ছিলেন। শোনা যায়, বাঁশি বাজানোর অপরাধে তিনি রাজ্য থেকে একজনকে নির্বাসিত এবং খুনের অভিযোগে এক পুত্র এবং মদ্যপানের অভিযোগে অন্য পুত্রের মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান এবং তা কার্যকর করেছিলেন। ইতিহাসবিদগণ বলেন, হাসান পরবর্তী বছরগুলোতে কখনোই তার দুর্গের বাইরে আসেননি।

হাসান সাব্বাহ যখন তার মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে বলে অনুভব করছিলেন তখন তিনি তার সহকারী বুজুর্গ-উমিদকে তার উত্তরাধিকার হিসেবে মনোনীত করে যান। তিনি আরো তিনিজনকে তার সহকারী হিসেবে মনোনীত করে যান। কিছুদিন অসুস্থতায় ভোগার পর হাসান ১১২৪ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। তাকে আলামুতের অদূরে দাফন করা হয়।

হাসান সাব্বাহর শুরু করা কাজ অ্যাসাসিনরা আরো দেড় শতকেরও বেশি সময় ধরে সফলভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়। হাসানকে ইসমাইলীদের ত্রাণকর্তা বলে অভিহিত করা যায়। তার সমাধিতে প্রতি বছর অসংখ্য নিজারি ইসমাইলি জিয়ারত করতে যেত। মঙ্গোলরা ১২৫৬ খ্রিস্টাব্দে তার সমাধি ধ্বংস করে দেয়।

 লেখক: রাকিব হুসাইন

Post a Comment

Previous Post Next Post